গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
- By Jamini Roy --
- 21 November, 2024
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাবে আবারও ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় বুধবার (২০ নভেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়। এতে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র দেশ হিসেবে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।
ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন উপদূত রবার্ট উড বলেন, ‘এ প্রস্তাব হামাসের জন্য ভয়ংকর বার্তা বহন করে। জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না করেই আমরা কোনো প্রস্তাবে সমর্থন দিতে পারি না।’ তিনি আরও জানান, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের সংশোধন চেয়েছিল, যা আমলে নেওয়া হয়নি।
নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী ১০ সদস্য রাষ্ট্র গাজায় অবিলম্বে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এই প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। প্রস্তাবে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ফিলিস্তিনের উপদূত মাজেদ বামেয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর সমালোচনা করে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি হাজারো প্রাণ রক্ষা করতে পারে। এটি কোনো সমাধানের শেষ নয়, বরং প্রথম পদক্ষেপ।’ তবে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে। এর প্রতিশোধে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। ইসরায়েলের আক্রমণে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজার প্রায় ২৩ লাখ জনগণ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
এ নিয়ে গত এক বছরে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ওঠা চারটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবের বিরোধিতার কারণে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা বড় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো বিশ্ব নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনের সংকট সমাধানের পথ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্য প্রয়োজন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বারবার ভেটো দেওয়ার ফলে এই প্রচেষ্টায় বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।